স্বকৃত গালিব,কুবি প্রতিনিধি :
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে (কুবি) পতিতালয় বলায় এক ছাত্রের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রবিবার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন মজুমদার বাদী হয়ে এই মামলা করেন। এ মামলার আসামীর নাম মেহেদি হাসান। তিনি কুবির সাংস্কৃতিক সংগঠন থিয়েটারের সাবেক সভাপতি ও আইসিটি বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে এই মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই ছাত্রের সনদও সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তাছাড়া তার সনদ কেন স্থায়ী বাতিল করা হবেনা এই মর্মে শোকজ করা হবে। কিছু বিষয় আছে যার কোন ক্ষমা নেই। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আইসিটি ধারা ২৯ ও সাধারণ ধারা ৩১ মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যার মামলা নং-৩১। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে থিয়েটারের আয়োজনে শহীদ মিনারে ‘কবর’ নাটক পরিবেশন করে থিয়েটার। সময় স্বল্পতার কারণে কিছু সময় পর নাটকটি বন্ধ করে দেয় কুবি প্রশাসন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ হয়ে থিয়েটারের সাবেক সভাপতি ও আইসিটি বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মেহেদি হাসান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে বলা হয়, ‘কুমিল্ল বিশ্ববিদ্যালয় একটি পতিতালয়। যার দালাল হচ্ছে সবকটা শিক্ষক আমি পুনরায় বলছি সবকটা শিক্ষক’। পরে তার এমন কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর স্ট্যাটাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এর মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। পরবর্তীতে প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চেয়ে লিখিত দেন মেহেদি। এদিকে, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষক সমিতি তার এ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশাসন কর্তৃক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে এ মামলা করা হয়। এই বিষয়ে অভিযুক্ত মেহেদি হাসান বলেন, আমি ভুল করেছি। ক্ষমাও চেয়েছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনুরোধ আমার জীবনের ঝুঁকি হয় এমন কোন শাস্তি যেন তারা না দেন। এদিকে এদিকে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির কাছে মেহেদী হাসানের শাস্তি শিথিল করার আবেদন জানান থিয়েটারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এমন কাণ্ডে তারা বিব্রত বোধ করছেন জানিয়ে মানবিক দিক বিবেচনায় অভিযুক্তের ক্ষমা প্রার্থনা করেন।